মোস্তফা কামাল সুমন : আজ ৩০ জুন। ঐতিহাসিক সাঁওতাল বিদ্রোহ দিবস। ইতিহাসে ১৮৫৫ সালের সাঁওতাল বিদ্রোহ এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। কিন্ত এই একই তারিখ গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের সাঁওতালদের জন্য এক কলঙ্কজনক দিন। ২০১৬ সালের ৩০ জুন সাঁওতাল বিদ্রোহ দিবসের আলোচনা শেষে রংপুর সুগার মিলের সাহেবগঞ্জ বাণিজ্যিক খামারের সরকারি জমি দখল করে নেয় সাঁওতাল ও তাদের স্থানীয় মিত্ররা। তাদের এই দখলের ফলেই গোবিন্দগঞ্জের অপার সম্ভাবনার দুয়ার আরইপিজেড গড়ে তোলার অন্তরায় হয়ে দেখা দিয়েছে।
২০১৬ সালের ৩০ জুন কি ঘটেছিলো: আর মাত্র কয়েকদিন পরেই ছিল পবিত্র ঈদুল ফিতর (৫ জুলাই)। সরকারি ছুটির আমেজ ছিল তখন। ৩০ জুন গোবিন্দগঞ্জ ঘোড়াঘাট সড়কের দক্ষিণ পার্শ্বে সাহেবগঞ্জ বটতলী মোড়ে ১৬১তম সাঁওতাল বিদ্রোহ দিবস উপলক্ষে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই আলোচনা সভায় তৎকালীন তুখোড় বাম নেতা পঙ্কজ ভট্টাচার্য সহ অনেক বাম রাজনৈতিক নেতা অংশগ্রহণ করেন। আলোচনা সভায় বক্তারা সাঁওতালদের উস্কে দিতে থাকে। আলোচনা সভা শেষে ওই দিন বিকেলেই খামারের মধ্য ব্লকে সাঁওতালরা বাঁশ কঞ্চি দিয়ে ঝুপড়ি ঘর তোলা শুরু করে। তারা খামারের জমি দখল করে নিতে থাকে। খবর পেয়ে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং সাঁওতালদের ঘর তুলতে নিষেধ করেন। এর পর আস্তে আস্তে স্থানীয় ও বহিরাগত সাঁওতাল এবং তাদের স্থানীয় মুসলমান মিত্ররা পুরো সাহেবগঞ্জ বাণিজ্যিক খামার দখল করে নেয়। সারাদেশে নিজেদের এজেন্ট দ্বারা প্রচার শুরু করে, এই খামারের জমি তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি।
আজ তিন বছর হতে চললো প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক গোবিন্দগঞ্জে আরইপিজেড গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছে। সাহেবগঞ্জ বাণিজ্যিক খামারেই হবে দেশের দশম রপ্তানী প্রক্রিয়াকরণ এলাকা। নাম দেওয়া হয়েছে রংপুর রপ্তানী প্রক্রিয়াকরণ এলাকা সাংক্ষেপে আরইপিজেড। কিন্তু অবৈধ ভাবে খামারের জমি সাঁওতালরা দখল করে থাকায় হুমকির মুখে পড়ে গেছে গোবিন্দগঞ্জে ইপিজেড স্থাপন। শুধু জমি দখলের কারণে বিগত তিন বছরেও গোবিন্দগঞ্জের আর্থসামাজিক অবস্থা বদলে দেওয়ার আরইপিজেড আলোর মুখ দেখেনি।