এমপি সমীপে, মাত্র একটি কাজের মাধ্যমে স্থায়ী অমরত্ব আনুন

মোস্তফা কামাল সুমন: এই জনপদের মানুষের অন্যতম একটি বড় সমস্যা তারা দীর্ঘস্থায়ী চিন্তা করতে পারে না। তাদের চিন্তা সর্বোচ্চ সাত দিনের কিংবা তার চেয়ে কিছু বেশি সময়ের। কিন্তু গোবিন্দগঞ্জ জনপদের সার্বিক কল্যাণে অবশ্যই আপনাকে আগত একটি দীর্ঘ স্থায়ী সমস্যা থেকে গোবিন্দগঞ্জ বন্দরকে বাঁচাতে উদ্যোগ নিতে হবে। আর আপনার শুধু মাত্র এই একটি উদ্যোগ অদূর আগামীতে আপনাকে জনগণের মাঝে স্থায়ী অমরত্ব দিবে।

খুব ছোট একটি উপজেলা শহর আমাদের প্রিয় গোবিন্দগঞ্জ বন্দর। মহাসড়ক ধরে এই বন্দরের ব্যাপ্তি মাত্র দুই আড়াই কিলো। উপজেলা শহরটি এতোদিনে ক্রিয়েশনের কেন্দ্রবিন্দু হতে পারেনি। তবে অন্য পকেট উপজেলা থেকে যে টুকু আমিত্ব তা শুধু ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের জন্য। এই মহাসড়ক গোবিন্দগঞ্জ বন্দর সহ পুরো উপজেলার প্রাণ ভোমরা। বন্দরের সেই দুই আড়াই কিলো মহাসড়কের এক দেড় কিলো জুড়ে গড়ে উঠবে ফ্লাইওভার। একবার ভাবুন তো, কি হবে প্রিয় ছোট এই শহরটির।

গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার আরোও যে কয়েকটি জায়গায় ফ্লাইওভার হয়েছে যেগুলো একবার অবলোকন করে দেখুন। উদাহরণ হিসেবে ফাঁসিতলা এবং বালুয়া বাজারের ফ্লাইওভার সামনে আনছি। ফাঁসিতলার পশ্চিম অংশ এবং বালুয়া বাজারের পূর্ব অংশ মৃত। যে অংশ সক্রিয় হয়েছে সেই অংশে সরকারি খাস হাট বাজার আছে। ঠিক গোবিন্দগঞ্জ বন্দরের একই অবস্থা হবে। পশ্চিম অংশ সক্রিয় থাকবে এবং পূর্বাংশ মৃত হয়ে যাবে। পশ্চিম অংশে সরকারি খাস হাট থাকায় সেটা মৃত হবে না। যত চেষ্টা করা হোক পূর্ব অংশের মৃত্যু ঠেকানো সম্ভব হবে না।

উন্নয়নের বিড়াম্বনা আছে বিশ্বাস করি। তবু শুধু দক্ষ নেতৃত্ব পারে এই বিড়াম্বনা থেকে মুক্তি দিতে। বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলা শহরের উদাহরণ সামনে আনছি। এই মহাসড়ক সেখানেও সম্প্রসারিত হলেও ফ্লাইওভার হয়নি। ফলে শেরপুর শহরের কোন অংশ মৃত হয়ে উঠেনি। বরং উভয় অংশই পুনজীবিত।

গোবিন্দগঞ্জ বন্দরে ফ্লাইওভার হলে শহরটির একাংশ মৃতপুরী হবে। আপনি এখন ক্ষমতায়, এই সময় শহরটি ফ্লাইওভারের কারণে মৃত হলে এর দায় আপনার জন্য খুব বেশি আনন্দদায়ক নাও হতে পারে। আর যদি আপনার উদ্যোগে মহাসড়কের এই ফ্লাইওভার না হয়ে আরও বেশি সম্প্রসারিত মহাসড়ক হয় গোবিন্দগঞ্জ বন্দরে তবে বিশ্বাসের সাথে বলছি, শুধু এই কাজটির জন্য আপনি স্থায়ী অমরত্ব লাভ করবেন এবং এই ফল আপনার প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে প্রবাহিত হবে।

রাজনৈতিকবিদদের অন্যতম কাজ সরকারি নীতি নির্ধারনী বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা। আপনি অত্র জনপদের আপাদমস্তক রাজনীতিবিদ। জীবনের প্রায় পুরোটা সময়ই ব্যয় করেছেন জনসেবায়। সাথে আপনি এখন সরকারি দলীয় জাতীয় সংসদ সদস্য। পুরো উপজেলায় আপনার মনোনীত ব্যক্তিরা জনপ্রতিনিধির দায়িত্বে। আপনার উদ্যোগ সর্বাপেক্ষা কার্যকরী হবে। কোন ভাবেই যাতে গোবিন্দগঞ্জ বন্দরে ফ্লাইওভার না হয়। শহরে রাস্তা আরও সম্প্রসারিত হোক কিন্তু ফ্লাইওভার নয়।

লেখক: শিক্ষক, সাংবাদিক ও সমাজকর্মী